সর্ববাহনবাহনা গিরিদুহিতা
সর্ববাহনবাহনা গিরিদুহিতা
বিমলোৎকর্ষিণী জ্ঞানা ক্রিয়া নিত্যা চ বুদ্ধিদা ।
বহুলা বহুলপ্রেমা সর্ববাহনবাহনা ॥
দীপার্ণবশিল্পশাস্ত্রের অন্তর্ভুক্ত "জয়পৃচ্ছা" গ্রন্থে জগদম্বা শিবাণীর বহুবিধ স্বরূপের বর্ণনা পাওয়া যায়। তাহাতে দেবীর একাধিক বাহনের পরিচয় মেলে। দেবী কখনো গরুড়াসনা, কখনো হংসারুঢ়া, কখনো সিংহবাহিনী আবার কখনো গোধিকাসনা। নীচে তদুক্ত গ্রন্থানুসার পরাশক্তির কতগুলি চমকপ্রদ মূর্তিতত্ত্বের বর্ণনা দেওয়া হল —
শিল্পশাস্ত্রানুসার পরাম্বা পার্বতী ব্রাহ্মণদের নিকট ত্রোতলা, ক্ষত্রিয়দের নিকট ত্রিপুরা, বৈশ্যের নিকট সৌভাগ্যা ও শূদ্রের নিকট বিজয়া রূপে তাঁদের উপর কৃপা করেন।
ত্রোতলাগৌরী —
দক্ষিণে চাক্ষমালাং চ তস্যাধশ্চ কমণ্ডলুম্ । তত্রৈব পীছিকাং বামে বামাধঃ শঙ্খমুত্তমম্ ।রূপেণ ত্রোতলা নাম মূর্ত্তিশ্চ হংসবাহিনী ॥
ত্রোতলা দেবী চতুর্ভুজা। তাঁর দক্ষিণ উর্ধ্বহস্তে অক্ষমালা নিম্নে কমণ্ডলু। বামদিকের উর্ধ্বহস্তে পালকের পাখা ও নীচে শঙ্খ ধারণ করেন। তিনি হংসের উপর আরুঢ়া।
ত্রিপুরাগৌরী —
অভয়ং চ দক্ষিণে হস্তে তস্যোর্ধ্বেঽঙ্কুশমঙ্গুলে । পাশং চ বামহস্তে তু লিঙ্গ চ তদধঃ স্থিতম্ । প্রেতাসনা মহাদেবী ত্রিপুরা নাম মূর্ত্তিকঃ ॥
ত্রিপুরা দেবী চতুর্হস্তে অভয়, অঙ্কুশ, পাশ ও শিবলিঙ্গ ধারণ করেন। তিনি প্রেতবাহিনী।
সৌভাগ্যাগৌরী —
দক্ষিণে চাক্ষসূত্রং চ তস্যোর্ধ্বে পদ্মমুত্তমম্ । বামে তু পুস্তকং চৈব বামাধঃ ফলমুত্তমম্ ॥ ১১ ॥ গরুড়ে চ সমারূঢা সৌভাগ্যবেত্তা মূর্ত্তিকঃ ।
সৌভাগ্যা নামক পার্বতী তাঁর চার হাতে অক্ষমালা, পদ্ম, পুস্তক ও শ্রীফল ধারণ করেন। তিনি গরুড়াসনা ।
বিজয়াগৌরী —
দক্ষিণে চাক্ষসূত্রং চ তদুর্ধ্বে দণ্ডমুত্তমম্ ॥ ১২ ॥ বামে তু পুস্তকং চৈব বামাধঃ চাভয়ং তথা । প্রসন্নমুখা দেবী চ বিজয়া নাম মূর্ত্তিকঃ ॥ ১৩ ॥
বিজয়া দেবী চতুর্হস্তে অক্ষসূত্র, দণ্ড, পুস্তক ও অভয়মুদ্রা ধারণ করেন। তিনি দণ্ডায়মানা।
মূলগৌরী —
দক্ষিণে চাক্ষসূত্রং চ ভূজোর্ধ্বেশ্বরমেব চ । গণং চ বামহস্তে চ তস্যাধশ্চ কমণ্ডলুম্ ॥ ১৪ ॥ গৌরী নামেন বিখ্যাতা মূর্তিশ্চ সিংহবাহিনী ।
গৌরীদেবী চতুর্হস্তা। ডানদিকের নীচের হাতে অক্ষমালা, উপরে ঈশ্বর বা শিবকে ধারণ করেন। বামদিকের উপরের হাতে গণেশ ও নীচে কমণ্ডলু ধারণ করেন। ইনি সিংহবাহিনী।
পরমশিবপ্রিয়া ভগবতী বিশ্বেশ্বরী উমার জয় হউক!
ধন্যবাদান্তে : নিহাল ঠাকুর
Comments
Post a Comment